“জুলাই-অগাস্টের গণ-আন্দোলনের পর থেকে একটি জাপানি কোম্পানিও বাংলাদেশ ছেড়ে যায়নি; তারা এই দেশে থাকতে আগ্রহী,” বলেন রাষ্ট্রদূত।
Published : 12 Dec 2024, 12:12 AM
বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও স্থিতিশীলতার জন্য অব্যাহত সমর্থনের আশ্বাস দিয়েছেন জাপানের রাষ্ট্রদূত ইওয়ামা কিমিনোরি।
তিনি বলেছেন, সরকার পরিবর্তন হলেও তার দেশের বিনিয়োগকারীরা বাংলাদেশে অবস্থান করে অর্থনৈতিক উন্নয়নে সহযোগিতা করে যাবে। বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের সংস্কার কার্যক্রমেও সমর্থন করবে।
“জুলাই-অগাস্টের গণ-আন্দোলনের পর থেকে একটি জাপানি কোম্পানিও বাংলাদেশ ছেড়ে যায়নি। তারা এই দেশে থাকতে আগ্রহী,” বলেন রাষ্ট্রদূত।
রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন যমুনায় বুধবার প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে বিদায়ী সাক্ষাৎ করেন কিমিনোরি। এ সময় তিনি জাপানের পক্ষ থেকে বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক অব্যাহত রাখার প্রতিশ্রুতি তুলে ধরেন বলে প্রধান উপদেষ্টার দপ্তর এক বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে।
মুহাম্মদ ইউনূসের নেতৃত্বের প্রশংসা করে কিমিনোরি বলেন, জাপান সরকার বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক আরও দৃঢ় করতে তিনটি স্তম্ভে কাজ করবে। এগুলো হল- শান্তি ও স্থিতিশীলতা, অর্থনৈতিক সহযোগিতা এবং মানুষের সঙ্গে মানুষের মিথস্ক্রিয়া বা সম্পর্ক।
নির্বাচনি ব্যবস্থাসহ অন্তর্বর্তী সরকারের অন্যান্য সংস্কার উদ্যোগের প্রতি টোকিওর দৃঢ় সমর্থনের কথা পুনর্ব্যক্ত করে তিনি বলেন, “আমরা এই তিন স্তম্ভ সমর্থনে যথাসাধ্য চেষ্টা করব।”
বাংলাদেশ-জাপান সম্পর্কে অবদানের জন্য রাষ্ট্রদূত ইওয়ামা কিমিনোরিকে ধন্যবাদ জানান প্রধান উপদেষ্টা। এশিয়ার এ দুই দেশের মধ্যে দৃঢ় সম্পর্কের কথা তুলে ধরে তিনি বলেন, এই সম্পর্ক সবসময়ই ‘খুব শক্তিশালী’ ছিল।
বাংলাদেশে আরও জাপানি বিনিয়োগের আহ্বান জানান মুহাম্মদ ইউনূস। বাংলাদেশ সরকার বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণে গুরুত্বপূর্ণ সংস্কার কার্যক্রম পরিচালনা করছে জানিয়ে তিনি বলেন, “বাংলাদেশে জাপানি বিনিয়োগকারীদের উপস্থিতি আমাদের জন্য ইতিবাচক বার্তা দেয়।”
রাষ্ট্রদূত কিমিনোরি জাপানি কোম্পানি নিক্কেইর একটি বার্ষিক সম্মেলনে যোগ দিতে প্রধান উপদেষ্টাকে আমন্ত্রণ জানান। ওই সম্মেলনে জাপানের প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য দেওয়ার সম্ভাবনার কথাও তুলে ধরেন তিনি।
কিমিনোরি বলেন, সম্মেলনে প্রধান উপদেষ্টা জাপানের শীর্ষ কোম্পানির প্রধান নির্বাহীদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে তাদের বাংলাদেশে বিনিয়োগের আমন্ত্রণ জানাতে পারবেন।
রোহিঙ্গা সঙ্কট নিয়ে আন্তর্জাতিক সম্মেলন আয়োজনের জন্য প্রধান উপদেষ্টার উদ্যোগের প্রশংসা করে জাপানি রাষ্ট্রদূত বলেন, টোকিও এই সম্মেলনের প্রতি জোরালো সমর্থন দিচ্ছে।
সাক্ষাতে প্রধান উপদেষ্টা মিয়ানমারের পশ্চিমাঞ্চলীয় রাখাইন রাজ্যে জাতিসংঘের মাধ্যমে একটি নিরাপদ এলাকা তৈরির আহ্বান জানান, যেখানে সংকট সমাধানের আগ পর্যন্ত বাস্তুচ্যুত সম্প্রদায়কে অস্থায়ীভাবে পুনর্বাসন করা যাবে।
অন্যদের মধ্যে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) বিষয়ক প্রধান সমন্বয়কারী এবং সরকারের সিনিয়র সচিব লামিয়া মোরশেদ বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।