বিষয়বস্তুতে চলুন

মা'আদ ইবনে আদনান

উইকিপিডিয়া, মুক্ত বিশ্বকোষ থেকে
মা'আদ ইবনে আদনান
জন্মখ্রিস্টপূর্ব ৫৯৮
দাম্পত্য সঙ্গীমুআনা বিনতে জাওশাম ইবনে জুলহুমা ইবনে আমরু
সন্তাননিজর
কুদা
কুনুস
ইয়াদ
পিতা-মাতাআদনান (পিতা)
মাহদাদ বিনতে আল-লাহাম (মাতা)
আত্মীয়আল-দিত ইবনে আদনান (ভাই)

মা'আদ ইবনে আদনান (আরবি: مَعَدّ ٱبْن عَدْنَان, প্রতিবর্ণীকৃত: Maʿadd ibn ʿAdnān) ছিলেন কুসাই ইবনে কিলাব এবং তার বংশধর, ইসলামের নবী মুহাম্মদ (সাঃ) এর একজন প্রাচীন পূর্বপুরুষ। তিনি প্রাচীন আরবি সাহিত্যে বারবার উল্লেখিত হয়েছেন।

জীবনী

[সম্পাদনা]

প্রচলিত বিশ্বাস অনুসারে, মা'আদ হলেন আদনানের পুত্র, যিনি পশ্চিম ও উত্তর আরবের বসবাসকারী ইসমাইলি আরবদের একটি গোষ্ঠীর জনক। আরব বংশলতিকা অনুসারে আদনানকে আরব উপদ্বীপের পশ্চিম উপকূলের হেজাজ অঞ্চল এবং নজদ বরাবর বসবাসকারী বহু ইসমাইলি গোত্রের জনক বলে মনে করা হয়।[][][][] বলা হয়ে থাকে, মা'আদ ছিলেন আদনানের জ্যেষ্ঠ পুত্র, তার জন্মের বছর ছিল ৫৯৮ খ্রিস্টপূর্বাব্দ।[][][][][]

মা'আদ চার পুত্রের জনক ছিলেন: নিজার, কুদা'আ, কুনুস এবং ইয়াদ। কুদা'আ ছিলেন জ্যেষ্ঠ পুত্র এবং তাই মা'আদ ইবনে আদনান তার কুনিয়া "আবু কুদা'আ" নামে পরিচিত ছিলেন।[১০]

ইসলাম-পূর্ব যুগের কবিদের রচিত কবিতা এবং তাদের বিবৃতি থেকে এটা অনুমান করা যায় যে, মা'আদ তাঁর পিতা আদনানের চেয়ে বেশি সম্মানিত এবং গুরুত্বপূর্ণ ছিলেন। ইসলাম-পূর্ব যুগের কাব্যে তাঁর নাম যতবার উল্লেখ করা হয়েছে এবং অন্যান্য গোত্রের বিরুদ্ধে শ্রেষ্ঠত্ব দাবি করার সময় তাঁর বংশধররা তাঁকে যেভাবে বর্ণনা এবং সম্মান করেছেন তার মাধ্যমে এটি প্রমাণিত হয়। এমনকি কিছু কবি আদনান এবং মা'আদের বংশধর না হওয়াকে "অপমান" হিসেবে বিবেচনা করেছেন। কিছু কবিতায় দক্ষিণ আরবে মা'আদ সম্প্রদায়ের লোকজনের মাযহিজ গোত্রের বিরুদ্ধে জয়ের উদযাপন এবং গৌরবগাথা করা হয়েছে।

যখন বাবিলীয় রাজা দ্বিতীয় নেবুচাদনেজার আদনানের সময়ে কেদারীয় আরবদের আক্রমণ করেছিলেন, তখন মা'আদকে তার পিতা দূরে পাঠিয়ে দেন। কেদারীয়দের পরাজয় এবং আদনান ও দ্বিতীয় নেবুচাদনেজার উভয়ের মৃত্যুর পর, অনেক আদনানী যাদের জোর করে মেসোপটেমিয়ায় থাকতে বাধ্য করা হয়নি তারা ইয়েমেনে পালিয়ে যায়। তবে মা'আদ, তার পিতার উত্তরসূরি হিসেবে, তাদের হেজাজ ও উত্তর আরবে ফিরে আসার নির্দেশ দেন। মা'আদ সম্প্রদায়ের পরাজয় ও বাস্তুচ্যুতি ইসলামপূর্ব যুগের আরবদের কাছে একটি বিপর্যয়কর ঘটনা হিসেবে বিবেচিত হতো। পরবর্তীতে তাদের পরাজয়ের ভয়াবহতা বর্ণনা করার জন্য একে একটি প্রবাদ হিসেবে ব্যবহার করা হতো।

তার পিতার মতো নয়, মা'আদের নাম ইসলামপূর্ব যুগের আরব কবিরা সমগ্র আরব উপদ্বীপে অগণিত বার উল্লেখ করেছেন, এমনকি ঘাসসানীয় এবং খ্রিস্টান কবিরাও সপ্ত মু'আল্লাকাতে তাঁর উল্লেখ করেছেন। ওই কবিতা থেকে বোঝা যায় যে ইসলামপূর্ব যুগের আরবরা মা'আদকে সম্মান করতেন। এছাড়া কোনো কারণে তারা বিশ্বাস করতেন যে সমগ্র আরব ইতিহাসের সমস্ত গৌরব মা'আদের গৌরবের তুলনায় কিছুই নয়। অন্য কিছু কবিতা থেকে এটাও প্রতীয়মান হয় যে ইসলামপূর্ব যুগের আরবদের মাঝে ব্যাপকভাবে মা'আদ সম্প্রদায়ের অধিবাস ছিলো।

তথ্যসূত্র

[সম্পাদনা]
  1. The chosen record of the Ancestries of Arab tribes, Abd al-Rahman al-Mughiri, Volume 1, Page 58
  2. Clans of Iraq, Abbas Al-Azzawi, Volume 1, Page 13
  3. The Beginning and the End, Ibn Kathir Volume 2, Page 187
  4. Fulfilling the need of Knowing the origins of Arabs, Ahmad al-Qalqashandi, Volume 1, Page 118
  5. উদ্ধৃতি ত্রুটি: <ref> ট্যাগ বৈধ নয়; Jawwad2 নামের সূত্রটির জন্য কোন লেখা প্রদান করা হয়নি
  6. The Historical Record of Ibn Khaldun, Vol. 2, Page: 229
  7. Nasab Quraysh (The Genealogy of Quraysh), Ibn Hazm, Page: 5
  8. The Historical Record of At-Tabari, Vol. 2, Page: 29
  9. Nihayat Al-Arab Fe Ma'rifat Ansab Al-Arab (Fulfilling the need of Knowing the origins of Arabs), Vol. 2, Page: 352
  10. Ibn Ishaq, MuhammadThe Life of Muhammad। Oxford University Press। পৃষ্ঠা 4।