লন্ডনের পাতাল রেল স্টেশনে ছিনতাইকারী এক ব্যক্তির ফোন কেড়ে নিয়ে গিয়ে কেবল তার ব্যাংক থেকে অর্থই তুলে নেয়নি, নিয়েছে ঋণও।
Published : 13 Dec 2024, 09:27 PM
যুক্তরাজ্যের লন্ডনে পাতাল রেলে ভ্রমণের সময় নিয়ল ম্যাকনামি নামের এক ব্যক্তি ছিনতাইকারীর কবলে পড়ে মোবাইল ফোন খোয়ান। একমনে ফোনে স্ক্রলিং করছিলেন তিনি। ট্রেনের দরজা বন্ধ হওয়ার ঠিক আগে ফোনটি তার হাত থেকে কেড়ে নিয়ে চম্পট দেয় ছিনতাইকারী।
এর দুই দিন পর নিয়ল জানতে পারেন, ছিনতাইকারী তার ব্যাংক অ্যাকাউন্ট থেকে প্রায় ২১ হাজার পাউণ্ড তুলে নিয়েছে। আর কেবল তাই নয় নিয়লের নামে ব্যাংক থেকে ৭ হাজার পাউন্ড ঋণও নিয়েছে ছিনতাইকারী।
নিয়ল বিবিসি-কে বলেন, ‘আগে মানুষ মুঠোফোন চুরি বা ছিনতাই করত তা বিক্রি করার জন্য। আর এখন সম্ভবত তা করা হচ্ছে যাবতীয় ব্যক্তিগত তথ্য হাতিয়ে অর্থ নিয়ে নেওয়ার জন্য।”
নিয়ল যে একাই এমন ঘটনার শিকার হয়েছেন তা নয়। ব্রিটিশ পরিবহন পুলিশের (বিটিপি) হিসাবমতে, ২০১৮ সাল থেকে ২০২৩ সালের মধ্যে যুক্তরাজ্যজুড়ে ট্রেন ও স্টেশনে চুরি-ডাকাতি ৫৮ শতাংশ বেড়ে গেছে।
ইংল্যান্ড, ওয়েলস এবং স্কটল্যান্ডে ট্রেন ও পাতাল রেল নেটওয়ার্কে টহলের দায়িত্বে আছে বিটিপি পুলিশ বাহিনী। তারা সতর্ক করে দিয়ে বলছে, ডিসেম্বর মাসে এমন চুরি-ডাকাতির সংখ্যা সবচেয়ে বেশি থাকে। সম্প্রতি কয়েকবছরে এ প্রবণতা দেখা গেছে।
গত বছর লন্ডনে এমন চুরি, ছিনতাইয়ের ঘটনা বেশি ঘটতে দেখা গেছে। রাজধানীর বাইরে বার্মিংহাম, কেন্ট, এক্সেস ও ম্যানচেস্টারেও এশন অনেক ঘটনা ঘটেছে বলে বিটিপি জানিয়েছে।
তবে চুরি বা ছিনতাইয়ের অসংখ্য অভিযোগ আসতে থাকলেও, ভুক্তভোগীরা এর সমাধান তেমন একটা পাচ্ছেন না। ২০২৩ সালে এমন চুরি-ছিনতাইয়ের ২৩ হাজার ৬৩৮টি অভিযোগ জমা পড়েছিল। কিন্তু ৯৮ শতাংশ ক্ষেত্রেই ভুক্তভোগীরা ‘ইতিবাচক সমাধান’ পাননি।
লন্ডনে ছিনতাইয়ের শিকার নিয়ল পেশায় একজন সংগীতজ্ঞ ও অভিনেতা। ১২ বছর ধরে লন্ডনে বাস করছেন। ঘটনার পরপরই তিনি পুলিশে অভিযোগ করেছিলেন।
তবে অনলাইন ব্যাংকিং আর কার্ডে লেনদেন সাময়িকভাবে বন্ধ করার জন্য ব্যাংকের সঙ্গে তাৎক্ষণিকভাবে যোগাযোগ করার কথা নিয়লের মাথায় আসেনি। আর এ সুযোগটিই নিয়েছে ছিনতাইকারী।
নিয়ল বলেন, “তারা সবকিছু নিয়ে গেছে। আমার অনলাইন ব্যাংকিংয়ে (ব্যালান্স) দেখাচ্ছে শূন্য...শূন্য...শূন্য।’
এছাড়াও, ছিনতাইকারী এইচএসবিসি ব্যাংক থেকে নিয়লের নামে ৭ হাজার পাউন্ড ঋণ নেয়। পরে তার অ্যাকাউন্টে থাকা সব অর্থ নিজের মোনজো অ্যাকাউন্টে সরিয়ে নেয়।